স্টার্টআপের জোয়ার : রাইড শেয়ারিং
বর্তমানে বাংলাদেশের স্টার্টআপ দুনিয়ার আকাশে বাতাসে বেশ কিছু শব্দ বারবার উচ্চারিত হচ্ছে। যেমন: অন ডিমান্ড রাইড শেয়ার সার্ভিস, কার শেয়ারিং, সাইন আপ করে মাসে কামান ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ইত্যাদি। আপনার মনে হতে পারে, Uber আর Pathao এর কথা। কিন্তু না। যারা একটু খোঁজ খবর রাখেন তারা জানেন যে, বাংলাদেশে ইতিমধ্যে রাইড শেয়ারিং অ্যাপ কিংবা উদ্যোগের বাম্পার ফলন হয়েছে। আজকের আর্টিকেলে আমি যতগুলোকে নিয়ে আলোকপাত করা যায় তা করার চেষ্টা করবো। সাথে কোন উদ্যোগগুলো এখন পর্যন্ত কার্যকরী সার্ভিস দিচ্ছে তাও তুলে ধরবো।
কোনো একটা উদ্যোগ বাংলাদেশে সফল হলে বা প্রচুর জনপ্রিয়তা পেলে সে ধরনের উদ্যোগ আশেপাশে আরো গজিয়ে উঠে। এটা এক হিসেবে ভালো। প্রতিদ্বন্দ্বীতা বাড়বে, কে কার থেকে ভালো কাস্টমার সার্ভিস দিতে পারে তা নিয়ে কাড়াকাড়ি থাকেই, নতুন নতুন অফারের বন্যা বইতে থাকে মার্কেট অডিয়েন্সকে নিজের দিকে টেনে আনার জন্য। আমরা সাধারণ জনতাও একবার এর সার্ভিস চেক করি, আরেকবার ওরটা। কিন্তু যখন ব্যাঙের ছাতার মতো একই ধরনের উদ্যোগ গজাতে থাকে, তখন নতুন এবং কিছুটা দেরিতে আসা এই একই ধরনের স্টার্টআপগুলোর মার্কেটে প্রবেশ করা চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায়। আর সাধারণ জনতারাও কনফিউজড হয়ে পড়ে, কোনটা ফেইক, কোনটা রিয়েল, কোনটা বেশি ভালো সার্ভিস দেয়। একই ধরনের অগণিত উদ্যোগ যখন একই মার্কেটে জন্ম নেয়, তখন তা আমার কাছে মার্কেট দূষণ মনে হয়।
বাংলাদেশে কোনো নির্দিষ্ট ধরনের উদ্যোগের বাম্পার ফলনের বেশ কয়েকটি দৃষ্টান্ত রয়েছে। যেমন: অনলাইন নিউজপেপার সাইট, কিংবা ইকমার্স ওয়েবসাইট। এগুলো নিয়ে আরেকদিন লিখবো। আজ যে ধরনের মার্কেট নিয়ে লিখতে যাচ্ছি তা হলো বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং বিজনেস।
আসুন প্রথমে দেখে নিই, এ ধরনের কী কী উদ্যোগ এখন বাংলাদেশে চালু আছে বা চালু হবে। Uber, Pathao, SAM, MUV, Oi Khali, Ola (Coming Soon), DAKO, Trippo, Shebaxyz, Ride, Amar Ride, Dhakar Moto, CNG Trip, Bahon, AmarBike, Chalo, BDCABS, Ezzyr, Let's go Bd, GO2 Smart Ride, Yes Bike, Garivara, Taxiwala, Autorent Bd ইত্যাদি।
এছাড়া, বাংলাদেশি অ্যাপ নির্মাতা জুবায়ের হোসাইন ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন যে, উনি বাংলাদেশের সেরা রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাবলিশ করতে যাচ্ছেন।
কোনো একটা উদ্যোগ বাংলাদেশে সফল হলে বা প্রচুর জনপ্রিয়তা পেলে সে ধরনের উদ্যোগ আশেপাশে আরো গজিয়ে উঠে। এটা এক হিসেবে ভালো। প্রতিদ্বন্দ্বীতা বাড়বে, কে কার থেকে ভালো কাস্টমার সার্ভিস দিতে পারে তা নিয়ে কাড়াকাড়ি থাকেই, নতুন নতুন অফারের বন্যা বইতে থাকে মার্কেট অডিয়েন্সকে নিজের দিকে টেনে আনার জন্য। আমরা সাধারণ জনতাও একবার এর সার্ভিস চেক করি, আরেকবার ওরটা। কিন্তু যখন ব্যাঙের ছাতার মতো একই ধরনের উদ্যোগ গজাতে থাকে, তখন নতুন এবং কিছুটা দেরিতে আসা এই একই ধরনের স্টার্টআপগুলোর মার্কেটে প্রবেশ করা চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায়। আর সাধারণ জনতারাও কনফিউজড হয়ে পড়ে, কোনটা ফেইক, কোনটা রিয়েল, কোনটা বেশি ভালো সার্ভিস দেয়। একই ধরনের অগণিত উদ্যোগ যখন একই মার্কেটে জন্ম নেয়, তখন তা আমার কাছে মার্কেট দূষণ মনে হয়।
বাংলাদেশে কোনো নির্দিষ্ট ধরনের উদ্যোগের বাম্পার ফলনের বেশ কয়েকটি দৃষ্টান্ত রয়েছে। যেমন: অনলাইন নিউজপেপার সাইট, কিংবা ইকমার্স ওয়েবসাইট। এগুলো নিয়ে আরেকদিন লিখবো। আজ যে ধরনের মার্কেট নিয়ে লিখতে যাচ্ছি তা হলো বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং বিজনেস।
আসুন প্রথমে দেখে নিই, এ ধরনের কী কী উদ্যোগ এখন বাংলাদেশে চালু আছে বা চালু হবে। Uber, Pathao, SAM, MUV, Oi Khali, Ola (Coming Soon), DAKO, Trippo, Shebaxyz, Ride, Amar Ride, Dhakar Moto, CNG Trip, Bahon, AmarBike, Chalo, BDCABS, Ezzyr, Let's go Bd, GO2 Smart Ride, Yes Bike, Garivara, Taxiwala, Autorent Bd ইত্যাদি।
বাংলাদেশে চালু রাইড শেয়ারিং অ্যাপের কিয়দংশ |
বাংলাদেশিদের স্বাবলম্বী করার জন্য আর শহরগুলোতে স্পেশালি ঢাকা শহরের প্রায় অচল ট্রান্সপোর্টেশন ব্যবস্থার চাকায় গতি আনার লক্ষ্যে এই উদ্যোগগুলো সত্যিই প্রশংসনীয়। কিন্তু উপরোল্লিখিত সবগুলো বিজনেসই কি সঠিকভাবে সার্ভিস দিতে পারছে? চলুন দেখা যাক।
Uber: বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় অ্যাপভিত্তিক অন ডিমান্ড রাইড শেয়ারিং সার্ভিস Uber বাংলাদেশে আসে ২০১৬ সালের নভেম্বরে। ইতিমধ্যে তারা বেশ ভালো সাড়া জাগিয়েছে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে Uber তাদের প্রিমিয়াম সার্ভিস চালু করে। আর দু’মাস পর নভেম্বরে Uber বাইক শেয়ারিং সার্ভিসও চালুু করে যা UberMOTO নামে পরিচিত। Uber বিশ্বব্যাপী ৫৩৮ টি শহরে তাদের কার্যক্রম চালায় যার মধ্যে ঢাকা একটি। Uber এর মতে, প্রতি মাসে ঢাকায় তাদের অ্যাপের গ্রাহক ও ড্রাইভারের সংখ্যা ১০% করে বাড়ছে।
Pathao: বাংলাদেশের স্টার্টআপ জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র বলা যায় Pathao কে। Pathao বাংলাদেশি জনপ্রিয় রাইড শেয়ারিং একটি উদ্যোগ। ২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে Pathao এর বাইক শেয়ারিং সার্ভিসের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এটি এখন ঢাকাসহ চট্টগ্রাম ও সিলেটেও তাদের সার্ভিস প্রদান করছে। Pathao প্রথমে ছিলো বাইক শেয়ারিং সার্ভিস। কিন্তু Uber এর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতার স্বরূপ তারা তাদের কার শেয়ারিং সার্ভিসও চালু করে। শুধু তাই নয়, আপনার যদি বাইসাইকেল থেকে থাকে, তবে তাও Pathao এর অধীনে রেজিস্টার করে প্রোডাক্ট ডেলিভারির মাধ্যমে বাড়তি আয় করতে পারবেন। Pathao এর মাধ্যমে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কুমিল্লাতে কম খরচে প্রোডাক্ট ডেলিভারি করা যায়। সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ান ডেলিভারি কোম্পানি Go-Jek থেকে Pathao ২ মিলিয়ন ডলার ইনভেস্টমেন্ট পায় যা তাদের কার্যক্রমকে আরো সম্প্রসারিত করবে। বাংলাদেশিদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়তা, একটার পর একটা সাকসেসফুল মার্কেটিং আর দেশজুড়ে তাদের ব্যবসার তড়িৎ ও বুদ্ধিদীপ্ত সম্প্রসারণ Pathao কে রাইড শেয়ারিং ব্যবসায় Uber থেকেও একধাপ এগিয়ে রাখছে।
SAM - Share A Motorcycle: ২০১৬ সালের ৭ মে ঢাকায় প্রথম মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং-এর ঘোষণা দেয় ‘স্যাম’ কর্তৃপক্ষ। Uber কিংবা Pathao এর আগে থেকে সার্ভিস শুরু করলেও এটি এতোটা জনপ্রিয়তা পায় নি এখন পর্যন্ত। তবে তারা এখন নতুন করে বিভিন্ন ধরনের ইউনিক সার্ভিস যেমন: SamX, SamPro, Pink Sam ইত্যাদির মাধ্যমে মার্কেটে শক্ত জায়গা করে নেওয়ার চেষ্টা করছে। Pink Sam নারী বাইকারদের জন্য ডেডিকেটেড স্পেশাল সার্ভিস। মেয়ে বাইকারদের চলছে প্রশিক্ষণ। রাইড শেয়ার করতে চান কিন্তু বাইক নেই? SAM আছে আপনার পাশে। ঢাকার পাশাপাশি সম্প্রতি সিলেটেও SAM তাদের সার্ভিস প্রদান করা শুরু করেছে।
MUV: MUV বাংলাদেশের আরেকটি সম্ভাবনাময়ী বাইক রাইড শেয়ারিং অ্যাপ। প্রতিনিয়ত গ্রাহক ও রাইডারদের ডিসকাউন্ট, মোবাইল রিচার্জ, কুপন কোড, মাসিক বোনাস প্রদানের মাধ্যমে নিজেদেরকে রাইড শেয়ারিং মার্কেটে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে তারা বেশ বদ্ধপরিকর বলে মনে হলো। শুধু রাইড শেয়ারিং নয়, ঢাকাতে ৩ ঘন্টায় প্রোডাক্ট ডেলিভারি পাওয়া যাবে এই সার্ভিস ব্যবহার করে। সম্প্রতি Ajker Deal এর সাথে MUV ডেলিভারি পার্টনার হিসেবে চুক্তি করে। সম্প্রতি MUV সকল সিএনজিকে তাদের ডিজিটাল সিএনজি সার্ভিসের আওতায় অানার ঘোষণা দেয় যার কারণে এখন থেকে সিএনজিকেও পাওয়া যাবে MUV অ্যাপের মাধ্যমে।
Oi Khali: Oi Khali বাংলাদেশের মটর সাইকেল ও সিএনজি ট্যাক্সি শেয়ারিং সার্ভিস। পরীক্ষামূলকভাবে এটির কার্যক্রম বছরখানেক আগে শুরু হলেও বর্তমান অবস্থা স্পষ্ট নয় আমার কাছে। তাদের ফেসবুক পেইজ ও ওয়েবসাইট ঘেঁটে তেমন কিছু জানা যায় নি। তবে তাদের আরেকটি সার্ভিস Oi Khali Delivery- এর কার্যক্রম চলছে ফুড ডেলিভারিতে। Cookups নামে একটি হোমমেড ফুড ডেলিভারি স্টার্টআপের ডেলিভারি পার্টনার হিসেবে কাজ করছে Oi Khali Delivery।
এছাড়া, Amar Ride, Dhakar Moto, CNG Trip, Bahon, AmarBike, Chalo, BDCABS, Ezzyr সহ বেশিরভাগ সার্ভিসই ছোট পরিসরে তাদের কার্যক্রম চালায়। কিছু সার্ভিসের বিরুদ্ধে বাজে সার্ভিস প্রদানের অভিযোগ পাওয়া যায় আবার কয়েকটি সার্ভিস প্রায় অচল বলেও জানা যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় কাস্টমার ফিডব্যাক ও গুগল প্লে স্টোরের অ্যাপ রিভিউ ঘেঁটে এসব মতামত যাচাই করা হয়।
অারো আছে বিভিন্ন নতুন সার্ভিস। যেমন: Trippo, DAKO, RIDE। এর মধ্যে DAKO এবং Trippo বাইকার ও কার ড্রাইভারদের রেজিস্ট্রেশনের জন্য বিভিন্ন বোনাস ও ছাড় দিয়ে যাচ্ছে। DAKO সম্প্রতি একযোগে ঢাকা ও চট্টগ্রামে তাদের সার্ভিস চালু করেছে। Trippo এর কার্যক্রম শুধু ঢাকাতেই।
দেখা যাচ্ছে, বাইক, কার, সিএনজি প্রভৃতিতে রাইড শেয়ার করার উদ্যোগ বাংলাদেশে এখন ভুরিভুরি। এতে যেমন নতুন কর্মসংস্থান হচ্ছে, বাড়তি আয়ও পাওয়া যাচ্ছে আবার সাধারণ সিএনজি চালকদেরও যাত্রী খরায় ভুগতে হচ্ছে। যুগ পরিবর্তন হচ্ছে তাই চাকরির ধরন, আয়ের উৎসের ধরন প্রভৃতিতে পরিবর্তন আসছে। যুগের সাথে নিজের ব্যবসাকে ব্লেন্ড করে জনতার কাছে নতুন করে তুলে ধরতে না পারলে আপনার আয়ের উৎস আরেকজন কেড়ে নিতে পারে শীঘ্রই যা দেখা গেছে রাইড শেয়ারিং অ্যাপগুলোর কারণে সিএনজি চালকদের ক্ষেত্রে।
নাগরিক জীবনের সময় বাঁচিয়ে, একটু বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা করে দিয়ে শহরের মানুষের জীবনে খানিকটা স্বস্তি এনে দিয়েছে এই রাইড শেয়ারিং অ্যাপগুলো যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়াকে ত্বরান্বিত করবে। কিন্তু একই ধরনের উদ্যোগে চারপাশ ভরে গেলে সেটা অধিক সন্ন্যাসীতে গাঁজন নষ্টের মতোই মনে হয় আমার কাছে; যা জনগণের কাছে নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট যেমন ফেলবে তেমনি আপনার রাইড শেয়ারিং উদ্যোক্তা হয়ে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্নে জল ঢেলে দিবে। যেহেতু এটি একটি সার্ভিসভিত্তিক বিজনেস, তাই গ্রাহকদেরকে ইউনিক সুবিধা আর সেরা সার্ভিস দিতে না পারলে বাংলাদেশের রাইড শেয়ারিং বিজনেসে টেকা কঠিন হয়ে পড়বে।
Uber: বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় অ্যাপভিত্তিক অন ডিমান্ড রাইড শেয়ারিং সার্ভিস Uber বাংলাদেশে আসে ২০১৬ সালের নভেম্বরে। ইতিমধ্যে তারা বেশ ভালো সাড়া জাগিয়েছে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে Uber তাদের প্রিমিয়াম সার্ভিস চালু করে। আর দু’মাস পর নভেম্বরে Uber বাইক শেয়ারিং সার্ভিসও চালুু করে যা UberMOTO নামে পরিচিত। Uber বিশ্বব্যাপী ৫৩৮ টি শহরে তাদের কার্যক্রম চালায় যার মধ্যে ঢাকা একটি। Uber এর মতে, প্রতি মাসে ঢাকায় তাদের অ্যাপের গ্রাহক ও ড্রাইভারের সংখ্যা ১০% করে বাড়ছে।
Pathao: বাংলাদেশের স্টার্টআপ জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র বলা যায় Pathao কে। Pathao বাংলাদেশি জনপ্রিয় রাইড শেয়ারিং একটি উদ্যোগ। ২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে Pathao এর বাইক শেয়ারিং সার্ভিসের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এটি এখন ঢাকাসহ চট্টগ্রাম ও সিলেটেও তাদের সার্ভিস প্রদান করছে। Pathao প্রথমে ছিলো বাইক শেয়ারিং সার্ভিস। কিন্তু Uber এর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতার স্বরূপ তারা তাদের কার শেয়ারিং সার্ভিসও চালু করে। শুধু তাই নয়, আপনার যদি বাইসাইকেল থেকে থাকে, তবে তাও Pathao এর অধীনে রেজিস্টার করে প্রোডাক্ট ডেলিভারির মাধ্যমে বাড়তি আয় করতে পারবেন। Pathao এর মাধ্যমে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কুমিল্লাতে কম খরচে প্রোডাক্ট ডেলিভারি করা যায়। সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ান ডেলিভারি কোম্পানি Go-Jek থেকে Pathao ২ মিলিয়ন ডলার ইনভেস্টমেন্ট পায় যা তাদের কার্যক্রমকে আরো সম্প্রসারিত করবে। বাংলাদেশিদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়তা, একটার পর একটা সাকসেসফুল মার্কেটিং আর দেশজুড়ে তাদের ব্যবসার তড়িৎ ও বুদ্ধিদীপ্ত সম্প্রসারণ Pathao কে রাইড শেয়ারিং ব্যবসায় Uber থেকেও একধাপ এগিয়ে রাখছে।
SAM - Share A Motorcycle: ২০১৬ সালের ৭ মে ঢাকায় প্রথম মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং-এর ঘোষণা দেয় ‘স্যাম’ কর্তৃপক্ষ। Uber কিংবা Pathao এর আগে থেকে সার্ভিস শুরু করলেও এটি এতোটা জনপ্রিয়তা পায় নি এখন পর্যন্ত। তবে তারা এখন নতুন করে বিভিন্ন ধরনের ইউনিক সার্ভিস যেমন: SamX, SamPro, Pink Sam ইত্যাদির মাধ্যমে মার্কেটে শক্ত জায়গা করে নেওয়ার চেষ্টা করছে। Pink Sam নারী বাইকারদের জন্য ডেডিকেটেড স্পেশাল সার্ভিস। মেয়ে বাইকারদের চলছে প্রশিক্ষণ। রাইড শেয়ার করতে চান কিন্তু বাইক নেই? SAM আছে আপনার পাশে। ঢাকার পাশাপাশি সম্প্রতি সিলেটেও SAM তাদের সার্ভিস প্রদান করা শুরু করেছে।
MUV: MUV বাংলাদেশের আরেকটি সম্ভাবনাময়ী বাইক রাইড শেয়ারিং অ্যাপ। প্রতিনিয়ত গ্রাহক ও রাইডারদের ডিসকাউন্ট, মোবাইল রিচার্জ, কুপন কোড, মাসিক বোনাস প্রদানের মাধ্যমে নিজেদেরকে রাইড শেয়ারিং মার্কেটে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে তারা বেশ বদ্ধপরিকর বলে মনে হলো। শুধু রাইড শেয়ারিং নয়, ঢাকাতে ৩ ঘন্টায় প্রোডাক্ট ডেলিভারি পাওয়া যাবে এই সার্ভিস ব্যবহার করে। সম্প্রতি Ajker Deal এর সাথে MUV ডেলিভারি পার্টনার হিসেবে চুক্তি করে। সম্প্রতি MUV সকল সিএনজিকে তাদের ডিজিটাল সিএনজি সার্ভিসের আওতায় অানার ঘোষণা দেয় যার কারণে এখন থেকে সিএনজিকেও পাওয়া যাবে MUV অ্যাপের মাধ্যমে।
Oi Khali: Oi Khali বাংলাদেশের মটর সাইকেল ও সিএনজি ট্যাক্সি শেয়ারিং সার্ভিস। পরীক্ষামূলকভাবে এটির কার্যক্রম বছরখানেক আগে শুরু হলেও বর্তমান অবস্থা স্পষ্ট নয় আমার কাছে। তাদের ফেসবুক পেইজ ও ওয়েবসাইট ঘেঁটে তেমন কিছু জানা যায় নি। তবে তাদের আরেকটি সার্ভিস Oi Khali Delivery- এর কার্যক্রম চলছে ফুড ডেলিভারিতে। Cookups নামে একটি হোমমেড ফুড ডেলিভারি স্টার্টআপের ডেলিভারি পার্টনার হিসেবে কাজ করছে Oi Khali Delivery।
এছাড়া, Amar Ride, Dhakar Moto, CNG Trip, Bahon, AmarBike, Chalo, BDCABS, Ezzyr সহ বেশিরভাগ সার্ভিসই ছোট পরিসরে তাদের কার্যক্রম চালায়। কিছু সার্ভিসের বিরুদ্ধে বাজে সার্ভিস প্রদানের অভিযোগ পাওয়া যায় আবার কয়েকটি সার্ভিস প্রায় অচল বলেও জানা যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় কাস্টমার ফিডব্যাক ও গুগল প্লে স্টোরের অ্যাপ রিভিউ ঘেঁটে এসব মতামত যাচাই করা হয়।
অারো আছে বিভিন্ন নতুন সার্ভিস। যেমন: Trippo, DAKO, RIDE। এর মধ্যে DAKO এবং Trippo বাইকার ও কার ড্রাইভারদের রেজিস্ট্রেশনের জন্য বিভিন্ন বোনাস ও ছাড় দিয়ে যাচ্ছে। DAKO সম্প্রতি একযোগে ঢাকা ও চট্টগ্রামে তাদের সার্ভিস চালু করেছে। Trippo এর কার্যক্রম শুধু ঢাকাতেই।
দেখা যাচ্ছে, বাইক, কার, সিএনজি প্রভৃতিতে রাইড শেয়ার করার উদ্যোগ বাংলাদেশে এখন ভুরিভুরি। এতে যেমন নতুন কর্মসংস্থান হচ্ছে, বাড়তি আয়ও পাওয়া যাচ্ছে আবার সাধারণ সিএনজি চালকদেরও যাত্রী খরায় ভুগতে হচ্ছে। যুগ পরিবর্তন হচ্ছে তাই চাকরির ধরন, আয়ের উৎসের ধরন প্রভৃতিতে পরিবর্তন আসছে। যুগের সাথে নিজের ব্যবসাকে ব্লেন্ড করে জনতার কাছে নতুন করে তুলে ধরতে না পারলে আপনার আয়ের উৎস আরেকজন কেড়ে নিতে পারে শীঘ্রই যা দেখা গেছে রাইড শেয়ারিং অ্যাপগুলোর কারণে সিএনজি চালকদের ক্ষেত্রে।
নাগরিক জীবনের সময় বাঁচিয়ে, একটু বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা করে দিয়ে শহরের মানুষের জীবনে খানিকটা স্বস্তি এনে দিয়েছে এই রাইড শেয়ারিং অ্যাপগুলো যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়াকে ত্বরান্বিত করবে। কিন্তু একই ধরনের উদ্যোগে চারপাশ ভরে গেলে সেটা অধিক সন্ন্যাসীতে গাঁজন নষ্টের মতোই মনে হয় আমার কাছে; যা জনগণের কাছে নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট যেমন ফেলবে তেমনি আপনার রাইড শেয়ারিং উদ্যোক্তা হয়ে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্নে জল ঢেলে দিবে। যেহেতু এটি একটি সার্ভিসভিত্তিক বিজনেস, তাই গ্রাহকদেরকে ইউনিক সুবিধা আর সেরা সার্ভিস দিতে না পারলে বাংলাদেশের রাইড শেয়ারিং বিজনেসে টেকা কঠিন হয়ে পড়বে।
Post a Comment